পাকা আম – পুষ্টিগুণে ভরপুর দেশী ফল 0 2030

পাকা আমের পুষ্টিগুন

চলছে আমের মৌসুম। আর পছন্দের তালিকায় সবারই কমবেশি আম পছন্দ। কাঁচা ও পাকা আম উভয়ই যেমন মজাদার, ঠিক তেমনি পুষ্টিসমৃদ্ধ। স্বাদে গন্ধে ভরা এই ফলটি সংরক্ষণ করে রাখা যায় বিভিন্ন উপায়ে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আমের শরবত বা জুস, মোরব্বা, আচার, জ্যাম, জেলি, আমসত্ব ইত্যাদি।

কাঁচা/ পাকা আমে আছে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ লবণ, আঁশ ইত্যাদি। নানা পুষ্টি উপাদানে ভরপুর আম, যা শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি কর্মশক্তি যোগাতেও সহায়তা করে। এর পুষ্টি উপাদান শরীরের নানাভাবে শক্তি যুগিয়ে ও ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে মানবদেহ সুস্থ রাখতে সহায়ক।

ক্যারোটিনের মাত্রা পাকা আমে বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম আমে ২৭৪০ মাইক্রো গ্রাম ক্যারোটিন থাকে। এতে ১.৩ গ্রাম আয়রন, ১৪ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম, ১৬ মি.গ্রা. ফসফরাস, ১৬ মি.গ্রা. ভিটামিন সি, ০.৯ মি.গ্রা. রিভোফ্লেভিন এবং ০.০৮ মি.গ্রা. থায়ামিন থাকে। এছাড়াও পাকা আমে রয়েছে ভিটামিন বি-১ ও বি-২। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ০.১ মি.গ্রা. ভিটামিন বি-১ ও ০.০৭ মি.গ্রা. বি-২ রয়েছে।

প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ০.৫ গ্রাম খনিজ লবণ থাকে। এতে কিছু পরিমাণ প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে। যেমন- প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ১ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৭ গ্রাম ফ্যাট থাকে। আম শ্বেতসারের ভালো উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ২০ গ্রাম শ্বেতসার পাওয়া যায়।

পাকা আম খাওয়ার উপকারিতা

* আমের ক্যারোটিন চোখ সুস্থ রাখে, সর্দি-কাশি দূর করে।

* এর পটাশিয়াম রক্ত স্বল্পতা দূর করে ও হৃদযন্ত্র সচল রাখতে সাহায্য করে।

* ক্যালসিয়াম হাড় সুগঠিত করে, হাড় ও দাঁতের সুস্থতা বজায় রাখে।

* কার্বোহাইড্রেট কর্মশক্তি যোগায়।

* আম কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, রক্তস্বল্পতা ও প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।

* আমের আয়রন অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে।

* আম থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। দাঁত, মাড়ি, ত্বক ও হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে ভিটামিন সি।

* এই ফলের আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা হজমে সহায়তা করে। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে।

* পাকা আম রক্তে কোলেস্টেরলের ক্ষতিকর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

অনেকেই মনে করেন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের দেশী ফল যেমন, পাকা আম খাওয়া ঠিক নয়, এটা ভুল ধারণা। পরিমিত পরিমাণ আম খেলে শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা পরিমিত পরিমাণে পাকা আম খেতে পারেন।

Previous ArticleNext Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জলপাই আচার – রেসিপি ১ – বানানোর নিয়ম 0 2966

জলপাই আচার

জলপাই আচার শব্দটা শোনার সাথে সাথেই ছেলে বুড়ো সবারই আসে জিভে জল। আজ তবে জলপাই আচার তো বানাবোই, তবে তার আগে জেনে নেই জলপাই সম্পর্কে কিছু কথা। জলপাই (Jolpai) একটি জনপ্রিয় গ্রীষ্মমন্ডলীয় টক ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Elaeocarpus serratus। এটি সিলন অলিভ (Ceylon olive) নামেও পরিচিত। পুরো ভারতীয় উপমহাদেশ, ইন্দোচীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে জলপাই বেশি হয়ে থাকে। জলপাই থেকে তৈরিকৃত আচার বেশ জনপ্রিয়, তবে জলপাই থেকে তৈরিকৃত জলপাই তেল এর ঔষধি গুনাগুন বেশ। এবার চলুন, দেখে নেয়া যাক কিভাবে সহজে স্বাস্থ্যসম্মত জলপাই আচার তৈরি করা যায় ঘরোয়া ভাবে।

জলপাই আচার বানানোর প্রয়োজনীয় উপকরণ :

  • কাঁচা জলপাই – ১ কেজি
  • আস্ত রসুন – ৩ টি ( কুচি কুচি করা )
  • আস্ত লাল মরিচ – ১০ টি
  • তেজ পাতা – ৩ টি
  • এলাচ – ৪ টি
  • দারুচিনি – ২ টি
  • পাঁচ ফোড়ন  – ৩ টেবিল চামচ
  • সরিষা বাটা – ৩ টেবিল চামচ
  • লাল মরিচের গুঁড়া -১ চা চামচ
  • হলুদের গুঁড়া -২ চা চামচ
  • ভিনেগার – ১ কাপ
  • চিনি – ২ কাপ বা আপনার স্বাদ মত 
  • সরিষার তেল – ১/২ লিটার 
  • লবণ – পরিমান মত

জলপাই আচার বানানোর পদ্ধতি :

  • কাঁচা জলপাই গুলো ধুয়ে সিদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে জলপাই গুলা ভর্তা করুন।  
  • ভর্তা করা জলপাই এ  লবণ, হলুদের গুঁড়া, লাল মরিচের গুঁড়া, সরিষা  বাটা ও ৪ টেবিল চামচ সরিষার তেল দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিন ও সূর্যের আলো বা রোদে ৪ ঘণ্টা রাখুন। 
  • একটি বড় পাত্রে তেল গরম করে আস্ত লাল মরিচ, তেজপাতা, রসুন, পাঁচ ফোড়ন, এলাচ, দারুচিনি দিয়ে ৪-৫ সেকেন্ড ভাজুন। তারপর তাতে জলপাই দিয়ে আবার নাড়তে থাকুন। চিনি ও লবণ  দিয়ে নেড়ে ৫ মিনিট রান্না করুন।
  • এরপর ভিনেগার দিয়ে অল্প আঁচে আরো ৫ মিনিট রান্না করুন।   
  • তৈরী হয়ে গেল জলপাই এর আচার। খানিকটা ঠাণ্ডা হলে কাঁচের বোতলে সংরক্ষণ করুন।

এভাবে বেশ সহজ উপায়ে ঘরে বসেই বানিয়ে ফেলতে পারেন মজাদার ও সুস্বাদু জিভে জল আনা জলপাই আচার। আর ঘরে বসে যখন কিছু বানাবেন তা হবে স্বাস্থ্যসম্মত ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিহীন। ছোট কিংবা বড়, পরিবারের সবাই মিলে খেতে পারবেন মজার এই জলপাই রেসিপি।

আরো পড়ুনঃ তালমাখনা খাওয়ার উপকারিতা

Summary
recipe image
Recipe Name
জলপাই আচার
Author Name
Published On
Preparation Time
Cook Time
Total Time
Average Rating
51star1star1star1star1star Based on 4 Review(s)

কালোজিরার উপকারিতা ও ওষধি গুনাগুন 0 743

কালোজিরার উপকারিতা

কালোজিয়া শুধু ছোট ছোট কালো দানা নয়, এর মধ্যে রয়েছে অবিশ্বাস্য ঐশ্বরিক শক্তি। প্রাচীনকাল থেকেই কালোজিরা মানবদেহের বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক ও প্রতিরোধক। শুধু এখানেই শেষ নয়, কালোজিরা চুলপড়া, মাথাব্যথা, অনিদ্রা, মাথা ঝিমঝিম করা, মুখশ্রী ও সৌন্দর্য রক্ষা, অবসন্নতা-দুর্বলতা, নিষ্ক্রিয়তা ও অলসতা, আহারে অরুচি এবং মস্তিষ্ক শক্তি তথা স্মরণশক্তি বাড়ায়। এ ছাড়া অনেকে গোপন শক্তি বাড়াতে যৌন চিকিৎসকের কাছে যান ও ভায়াগ্রা কিংবা যৌন শক্তিবর্ধক ঔষধ সেবন করেন! তাদেরকে বলছি আজ থেকে আর নয় ভায়াগ্রা, এক চামুচ কালোজিরাই যথেষ্ট। কারণ কালোজিরায় যৌন ক্ষমতা অপরিসীম। শুধু খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতেই নয়, আয়ুর্বেদিক ও কবিরাজি চিকিৎসাতেও কালোজিরার ব্যবহার হয়। কালোজিরার বীজ থেকে একধরণের তেল তৈরি হয়, যা মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

যা আছে কালোজিরায় – কালোজিরার উপাদানঃ
কালোজিরায় রয়েছে-ফসফেট, লৌহ, ফসফরাস, কার্বো-হাইড্রেট ছাড়াও জীবাণুনাশক বিভিন্ন উপাদান। কালোজিরায় ক্যান্সার প্রতিরোধক কেরোটিন ও শক্তিশালী হরমোন, প্রস্রাব সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, পাচক এনজাইম ও অম্লনাশক উপাদান এবং অম্লরোগের প্রতিষেধক।

এবার জেনে নিই কালোজিরার উপকারিতাঃ

১. পেট খারাপ সমস্যা সমাধানঃ নিয়মিত পেট খারাপের সমস্যা থাকলে কালোজিরা সামান্য ভেজে গুঁড়ো করে ৫০০ মিলিগ্রাম হারে ৭-৮ চা চামচ দুধে মিশিয়ে সকালে ও বিকেলে সাত দিন ধরে খেলে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যায়।

২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে কালোজিরা। নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে। এতে করে যে কোনও জীবানুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেহকে প্রস্তুত করে তোলে এবং সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

৩. হাপানি সমস্যার সমাধানঃ যারা হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য কালোজিরা অনেক বেশি উপকারী। প্রতিদিন কালোজিরার ভর্তা রাখুন খাদ্য তালিকায়। কালোজিরা হাঁপানি বা শ্বাস কষ্টজনিত সমস্যা দূর করে।

৪. ঠান্ডা সমস্যার সমাধানঃ প্রচণ্ড সর্দি হয়ে মাথা যন্ত্রণা হচ্ছে? এ ক্ষেত্রে কালোজিরা পুঁটলিতে বেঁধে শুঁকতে হবে। তবে পুঁটলিতে নেওয়ার আগে তা রগড়ে নিতে হবে। তাতে গন্ধ বের হয় এবং উপকার হয়।

৫. মাথাব্যাথার উপশমঃ প্রচন্ড মাথা ব্যথা? কালোজিরে বেটে কপালে প্রলেপ দিলে ও মিহি গুঁড়োর নস্যি নিলে উপকার হয়। এটা তখন ঝান্ডু বামের মত কাজ করবে।

৬. চুলকানি উপশমঃ কালোজিরা ভাজা তেল গায়ে মাখলে চুলকানিতে উপকার হয়।

৭. ডায়াবেটিসের সমাধানঃ কালোজিরা ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তের গ্লুকোজ কমিয়ে দেয়। এতে করে কালোজিরা ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করে।

৮. স্মরণশক্তি ঠিক রাখাঃ স্মৃতিভ্রংশ ও স্মরণশক্তির দুর্বলতায় কালোজিরা খুবই কার্যকর।

৯. পেট ও প্রস্রাব পরিষ্কার রাখাঃ পরিমাণমতো কালোজিরা খেলে প্রস্রাব পরিষ্কার হয়।

১০. শিশুর মানসিক বৃদ্ধিঃ শিশুদের কালোজিরা খাওয়ানোর অভ্যাস করলে দ্রুত শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি ঘটে।