মাইগ্রেনঃ মাথার পিছনে ব্যথা হওয়ার কারণ ও প্রতিকার 0 809

মাইগ্রেন

মাথাব্যথা মানুষের একটি সাধারণ সমস্যা। আর আমাদের চারপাশে মাথাব্যথায় ভোগা মানুষের সংখ্যা অধিক। মাথাব্যথা মূলত প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি – এই দুই ধরনের হয়ে থাকে। প্রাথমিক মাথাব্যথা হলো সেগুলো, যা অন্য কোনো রোগের কারণে হয় না। প্রাথমিক মাথাব্যথার মধ্যে আছে মাইগ্রেন, টেনশন মাথাব্যথা বা টেনশন হেডেক, ট্রাইজিমিনাল অটোমেটিক সেফালালগিয়াস অন্যতম।

মাইগ্রেন অ্যাটাক হলে সাধারণত ৪ থেকে ৭১ ঘণ্টা ধরে মাথায় ব্যথা হতে থাকে। এ ব্যথার অনুভব অনেকটা ছুরিকাঘাতের মতো। অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে আছে বমি বমি ভাব। এ ব্যথার সঙ্গে আলো ও শব্দের সংবেদনশীলতার সম্পর্ক আছে। কাজেই মাইগ্রেনের ব্যথা উঠলে কম আলোময় ও শব্দহীন জায়গায় থাকতে পারলে আরাম পাওয়া যায়।

গবেষকেরা মনে করেন, মাইগ্রেন অ্যাটাকের কারণ হলো মস্তিষ্কে রাসায়নিকের ভারসাম্যহীনতা। আবার জেনেটিক বা বংশগত কারণেও মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া আরও যে কারণগুলোর জন্য মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো স্ট্রেস, অ্যাংজাইটি, নারীদের হরমোনের পরিবর্তন, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া বা বেশি ঘুম হওয়া, মদ্যপান, ধুমপান কিংবা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

মাইগ্রেন প্রতিকার ও খাদ্যাভাস পরামর্শ

আমাদের জীবনযাপনের কিছুটা পরিবর্তন আনলে মাইগ্রেনের সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। খাবারের উপর নিয়ন্ত্রণ আনা গেলে মাইগ্রেন প্রতিকার করা সম্ভব।

কখনো সকালের নাশতা অবহেলা করা যাবে না, দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা যাবে না, প্রতিবেলা সুষম খাবার খেতে হবে এবং প্রতিদিন শরীর ও চোখের ব্যায়াম করতে হবে।

কাঠবাদাম, কাঠবাদামের দুধ, পার্সলিপাতা, মৌরি, রসুন, আদা ও তাজা আনারস খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। প্রতিদিন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, রিবোফ্লোবিন (ভিটামিন বি২), নিয়াসিন (ভিটামিন বি৩), ভিটামিন বি৫ ও ভিটামিন বি৬ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হবে।

মাইগ্রেন থেকে মুক্তির উপায়ঃ বাদ দিতে হবে কিছু খাবার

অ্যামাইনো অ্যাসিড টাইরামিনযুক্ত খাবারগুলো খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। এধরনের খাবারের মধ্যে রয়েছে- প্রসেস করা মাংস, মাখন, হার্ড চিজ, দুধ দিয়ে তৈরি খাবার, এভোকাডো, কলা, পাকা আম, বাঁধাকপি, বেগুন, আলু, টমেটো, রাসবেরি, চকলেট, রেড প্লাম, ইস্ট, অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়।

অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার, ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার এবং অ্যাসিডিটি তৈরি হয়, সে রকম খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ, ধারণা করা হয় যে অ্যাসিডিটির সঙ্গে মাইগ্রেনের ব্যথার গভীর সম্পর্ক আছে। অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তির ঘরোয়া সমাধান আপনি নিজে নিজেই করে ফেলে মাইগ্রেন থেকেও মুক্তি পেতে পারেন।

Previous ArticleNext Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

১০ মিনিট এই উপায়ে দড়ি লাফালেই কমবে মেদ 0 1809

পেটের মেদ কমানোর ব্যায়াম

অফিস আদালতে প্রচুর কাজের চাপ, খাওয়া দাওয়ায় অনিয়ম, অধিক মাত্রায় জাঙ্ক ফুড খাওয়ার ফলে অনেকের শরীরে জমছে মেদ। অতিরিক্ত মেদ শরীরে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে। যেমনঃ হৃদরোগ, স্ট্রোক, টাইপ টু ডায়াবেটিস ইত্যাদি। প্রতিদিন ১০ মিনিট দড়ি লাফালেই কমবে শরীরের মেদ।

পেটের মেদ কমাতে দড়ি লাফ

ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন একটু সময় করে নিয়ম করে লাফ দড়ি বা স্কিপিং(Skipping) নিয়ে ঘাম ঝরালেই শরীরে বাড়তি মেদ কমে যাবে অনেকটাই। একটানা ৩৫ মিনিট হাঁটা বা বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে জগিং বা দৌড়ানোয় যতটা মেদ ঝরে তার চেয়েও বেশি মেদ ঝরে মিনিট ১০ লাফালে। আসলে পেটের মেদ কমাতে দড়ি লাফ একটি সেরা ব্যায়াম।

তবে প্রথম দিকে ১০ মিনিট একটানা লাফাতে না পারলেও ক্ষতি নেই। সপ্তাহ দুয়েক পর ধীরে ধীরে দড়ি লাফের সময় বাড়ান। স্কিপিংয়ের কতগুলো নির্দিষ্ট উপায় থাকে, যা জানলে তা অভ্যাস করা ও মেদ ঝরানোর কাজ অনেকটা সহজ হয়।

স্কিপিং

বেসিক জাম্প

লাফদড়িতে সাধারণত এ ভাবেই লাফানো অভ্যাস করেন সকালে। লাফদড়ি দু’হাতে নিয়ে এমন ভাবে লাফান, যাতে দড়িটি দু’পায়ের তলা দিয়ে গিয়ে মাথার উপর দিয়ে ঘুরে আসে।

অল্টারনেট ফুট স্টেপ

এ ক্ষেত্রে দু’পা জোড়া করে একসঙ্গে লাফানো যাবে না। এক বার ডান পায়ের নীচ দিয়ে দড়ি নিয়ে যেতে হবে। আর এক বার বাঁ পা দিয়ে একই পদ্ধতিতে লাফাতে হবে। দড়ির গতির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে পায়ের ছন্দ।

বক্সার স্টেপ

অল্টারনেট ফুট স্টেপের মতোই প্রত্যেক লাফে পা বদলাতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে সেই লাফের উচ্চতাও বেশি হবে। আগে-পিছে দু’পায়ের মাঝে ফাঁক থাকবে বেশি। এই লাফ খুব দ্রুতলয়ে হয় না।

বক্সার স্টেপ

জাম্প রোপ ক্রিসক্রস

দু’হাতে লাফদড়ি নিয়ে এক বার স্বাভাবিকভাবে পায়ের তলা দিয়ে নিয়ে যেতে হবে। পরের বার হাত ক্রশ করে সেই দড়ি পায়ের তলা দিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এই লাফ একেবারেই সহজ নয়, এর জন্য অভ্যাস জরুরি।

আরও পড়ুনঃ ৪ টি চোখের ব্যায়াম ভাল রাখবে আপনার চোখ

ব্যাকওয়ার্ড জাম্পিং

এই ধরণের দড়ি লাফের বেলায় দড়ি মাথার উপর দিক থেকে পায়ের নীচে না এনে পায়ের নীচ থেকে ঘুরিয়ে মাথার উপরে আনতে হবে।

এছাড়াও আপনি যদি ছেলেদের কিংবা মেয়েদের স্কিপিং(skipping) বা দড়ি লাফের উপকারিতা(benefits) জেনে দড়ি লাফ শুরু করেন তবে আপনি মেদ কমানোর সাথে সাথে স্বাস্থ্যবানও হতে পারবেন।

দড়ি লাফের ক্ষতিকর দিক বা পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া

দড়ি লাফের উপকারিতা যেমন অনেক, ঠিক তেমনি দাড়ি লাফের কিছু ক্ষতিকর দিক বা পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াও আছে। সময় বা পরিস্থিতি ভেদে একটু সতর্ক হওয়াও প্রয়োজন। অসুস্থ শরীরে, কিংবা গর্ভাবস্থায় মেয়েদের জন্য দড়ি লাফের মত শারিরীক অনুশীলন পরিহার করা উত্তম। এ সময় স্কিপিং বা দড়িলাফ দিলে মেয়েদের জরায়ু ক্ষতিগ্রস্থ হবার সম্ভাবনা থেকে যায়।

সঠিক উপায়ে দড়ি লাফ দিয়ে থাকুন স্বাস্থ্যবান, জীবন যাপন হোন স্বাচ্ছন্দ্যময় আর মনের মত।

Summary

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার 0 253

ডেংগু জ্বর

ডেঙ্গু বর্তমান সময়ের সবচেয়ে পীড়াদায়ক রোগের একটি। এই জ্বরে আক্রান্ত একদিকে যেমন দূর্বল হয়ে পড়ে অন্যদিকে এর রেশ শরীরে থেকে যায় দীর্ঘদিন। তবে ডেঙ্গু প্রাণঘাতি কোনো রোগ নয়। বিশ্রাম ও নিয়ম মাফিক চললে এ থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

ডেঙ্গু প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে, ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু ফিভার এবং ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার।

ডেঙ্গু জ্বর কখন ও কাদের বেশি হয়?
মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, বিশেষ করে গরম এবং বর্ষার সময়টাতেই ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেশি থাকে। শীতকালে এই জ্বর হয় না বললেই চলে। শীতে লার্ভা অবস্থায় ডেঙ্গু মশা অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে। বর্ষার শুরুতেই সেগুলো থেকে নতুন করে ডেঙ্গু ভাইরাস বাহিত মশা বিস্তার লাভ করে।সাধারণত শহর অঞ্চলে অভিজাত এলাকায়, বড় বড় দালান কোঠায় এই মশার প্রাদুর্ভাব বেশি, তাই ডেঙ্গু জ্বরও এই এলাকার বাসিন্দাদের বেশি হয়। বস্তিতে বা গ্রামে বসবাসরত লোকজনের ডেঙ্গু কম হয় বা একেবারেই হয় না বললেই চলে।

ডেঙ্গু জ্বরের প্রতিকার ও চিকিৎসা
ডেঙ্গুর লক্ষণ তীব্র হলে বাসায় চিকিৎসা করার সুযোগ নেই। এমন রোগীদের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা নিতে হবে। তীব্র ডেঙ্গুতে রক্তচাপ কমে যেতে পারে, রোগীর অভ্যন্তরীণ অঙ্গ থেকে শুরু হতে পারে রক্তক্ষরণ। দ্রুত রক্তের অণুচক্রিকা (প্লাটিলেট) কমে যেতে পারে। সাধারণ ডেঙ্গুর কোনো নির্ধারিত চিকিৎসা নেই। কারও ডেঙ্গু হলে করণীয়: পূর্ণ বিশ্রাম; পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান। শরবত, ফলের রস, স্যুপ, ডাবের পানি, স্যালাইন পান; জ্বর বা ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল; অ্যাসপিরিন, আইবোপ্রোফেন কিংবা ব্যথা–বেদনানাশক ওষুধ গ্রহণ করা যাবে না। এগুলো ডেঙ্গুর রক্তক্ষরণজনিত জটিলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। ডেঙ্গু জ্বর সেরে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর যদি শরীর আরও বেশি খারাপ হতে থাকে, তবে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে; রক্ত পরীক্ষা করে অণুচক্রিকার এবং হেমাটোক্রিটের পরিমাণ জেনে নিতে হবে; রক্তের অণুচক্রিকা কমতে থাকলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে; অণুচক্রিকা ১০ হাজারের নিচে নেমে গেলে কিংবা রক্তক্ষরণ শুরু হলে রক্ত দিতে হবে।