অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তির ঘরোয়া সমাধান 2 1816

জীবনের গতি যত বাড়ছে, খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাস হচ্ছে অনিয়মিত। আর তারই সঙ্গে দেখা দিচ্ছে লাইফস্টাইলে নানারকম নেতিবাচক প্রভাব। তেমনি একটা কমন সমস্যা হচ্ছে অ্যাসিডিটি বা গলা, বুক ও পেট জ্বালাপোড়া করা।

সাধারণত বেশি ঝাল খাবার খাওয়া, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, দুশ্চিন্তা, ব্যায়াম না করা বা অতিরিক্ত ধূমপানের ফলে অ্যাসিডিটি হতে পারে। বদহজমের সমস্যা রুখতে ও পেটকে সুস্থ রাখতে তাই নজর দিন বিশেষ কয়েকটি দিকে, যা ম্যাজিকের মতো কাজ করবে। গলা, বুক ও পেট জ্বালাপোড়া কমানোর নিচের উপায় গুলো মেনে চললে বন্ধ হবে অ্যাসিডিটি। মনে রাখতে হবে গলা, বুক ও পেট জ্বালাপোড়া কিন্তু আলসারের লক্ষণ।

সময় মেনে খাবার খান : চেষ্টা করুন প্রতি দিন একই সময়ে ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ ও ডিনার করার। অল্প খান, কিন্তু বারে বারে খান। খাবারের মাঝে মোটামুটি তিন-চার ঘণ্টা সময়ের ব্যবধান রাখলে খাবার হজম হবে সহজে।

হালকা খান : রেড মিট বা গরু, খাসির মাংস যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। এটি কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের পক্ষে খুব একটা সুবিধার নয়। খাবার তালিকায় প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে আস্থা রাখুন মুরগির মাংসে। মশলাদের ঝোল বা কষা ছেড়ে সবজি দেয়া স্টু বা স্যুপই থাকুক পাতে। তবে রোজ চিকেন না খেতে চাইলে প্রোটিনের জোগান মেটাতে ভরসা রাখুন সেদ্ধ ডিমে। চিজ মেশানো অমলেট বা তেলে ভাজা পোচ এড়িয়ে চলুন।

চর্বিযুক্ত মাছ বা চালানি মাছ বাদ দিয়ে সামুদ্রিক কিছু মাছ, চারা মাছের ঝোল দিয়েও মাঝে মাঝে খাওয়া সারুন। এতে শরীরের কোলেস্টরলের মাত্রাও বজায় থাকবে।

চা-কফির বদলে গ্রিন টি পান করুন : চা-কফি ছেড়ে গ্রিন টি-তে ভরসা রাখুন। মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে গ্রিন টি। দুধ চা এড়িয়ে চলুন। মাঝেমধ্যে ডায়েট তালিকায় থাকুক ডাবের পানি।

লেবুর রস দিয়ে গরম পানির সঙ্গে দিন শুরু করুন : প্রতিদিন সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানি লেবুর রস মিশিয়ে খান। এতে শরীরের টক্সিন যেমন সরবে, তেমনই শরীরে পানির মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

ফল খান বেশি করেঃ খাদ্য তালিকায় অর্গানিক ফল সংযুক্ত করা গেলে তা উত্তম। যেমন, পেপে, পাকা আম, আনারস, কলা, লিচু প্রভৃতি ফল বেশি পরিমানে খেলে এসিডিটি থাকবে নিয়ন্ত্রণে।

শরীরকে আগের অবস্থায় ফেরাতে ও হজমশক্তি বাড়াতে খাবার শেষে নিয়মিত থাকুক টক দই। অফিসে গেলে সাথে রাখুন একটি গোটা ফল।

তথ্যসূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

আরো পড়ুনঃ ঠোটের কালো দাগ দূর করার উপায়

Previous ArticleNext Article

2 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জলপাই আচার – রেসিপি ১ – বানানোর নিয়ম 0 5196

জলপাই আচার

জলপাই আচার শব্দটা শোনার সাথে সাথেই ছেলে বুড়ো সবারই আসে জিভে জল। আজ তবে জলপাই আচার তো বানাবোই, তবে তার আগে জেনে নেই জলপাই সম্পর্কে কিছু কথা। জলপাই (Jolpai) একটি জনপ্রিয় গ্রীষ্মমন্ডলীয় টক ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Elaeocarpus serratus। এটি সিলন অলিভ (Ceylon olive) নামেও পরিচিত। পুরো ভারতীয় উপমহাদেশ, ইন্দোচীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে জলপাই বেশি হয়ে থাকে। জলপাই থেকে তৈরিকৃত আচার বেশ জনপ্রিয়, তবে জলপাই থেকে তৈরিকৃত জলপাই তেল এর ঔষধি গুনাগুন বেশ। এবার, চলুন দেখে নেয়া যাক কিভাবে সহজে স্বাস্থ্যসম্মত জলপাই আচার তৈরি করা যায়(jolpai achar recipe) ঘরোয়া ভাবে।

জলপাই আচার রেসিপি বানানোর প্রয়োজনীয় উপকরণ :

  • কাঁচা জলপাই – ১ কেজি
  • আস্ত রসুন – ৩ টি ( কুচি কুচি করা )
  • আস্ত লাল মরিচ – ১০ টি
  • তেজ পাতা – ৩ টি
  • এলাচ – ৪ টি
  • দারুচিনি – ২ টি
  • পাঁচ ফোড়ন  – ৩ টেবিল চামচ
  • সরিষা বাটা – ৩ টেবিল চামচ
  • লাল মরিচের গুঁড়া -১ চা চামচ
  • হলুদের গুঁড়া -২ চা চামচ
  • ভিনেগার – ১ কাপ
  • চিনি – ২ কাপ বা আপনার স্বাদ মত 
  • সরিষার তেল – ১/২ লিটার 
  • লবণ – পরিমান মত

জলপাই আচার বানানোর পদ্ধতি :

  • কাঁচা জলপাই গুলো ধুয়ে সিদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে জলপাই গুলা ভর্তা করুন।  
  • ভর্তা করা জলপাই এ  লবণ, হলুদের গুঁড়া, লাল মরিচের গুঁড়া, সরিষা  বাটা ও ৪ টেবিল চামচ সরিষার তেল দিয়ে ভালোভাবে মাখিয়ে নিন ও সূর্যের আলো বা রোদে ৪ ঘণ্টা রাখুন। 
  • একটি বড় পাত্রে তেল গরম করে আস্ত লাল মরিচ, তেজপাতা, রসুন, পাঁচ ফোড়ন, এলাচ, দারুচিনি দিয়ে ৪-৫ সেকেন্ড ভাজুন। তারপর তাতে জলপাই দিয়ে আবার নাড়তে থাকুন। চিনি ও লবণ  দিয়ে নেড়ে ৫ মিনিট রান্না করুন।
  • এরপর ভিনেগার দিয়ে অল্প আঁচে আরো ৫ মিনিট রান্না করুন।   
  • তৈরী হয়ে গেল জলপাই এর আচার। খানিকটা ঠাণ্ডা হলে কাঁচের বোতলে সংরক্ষণ করুন।

পরিশেষে, এভাবে বেশ সহজ উপায়ে ঘরে বসেই বানিয়ে ফেলতে পারেন মজাদার ও সুস্বাদু জিভে জল আনা জলপাই আচার। আর ঘরে বসে যখন কিছু বানাবেন তা হবে স্বাস্থ্যসম্মত ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিহীন। আর এভাবেই, ছোট কিংবা বড়, পরিবারের সবাই মিলে খেতে পারবেন মজার এই জলপাই রেসিপি(jolpai achar recipe)।

আরো পড়ুনঃ তালমাখনা খাওয়ার উপকারিতাফ্রাইড রাইস রেসিপি

Summary
recipe image
Recipe Name
জলপাই আচার
Author Name
Published On
Preparation Time
Cook Time
Total Time
Average Rating
51star1star1star1star1star Based on 4 Review(s)

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে যেসব খাবার 0 823

কোলেস্টেরল কমানোর ঘরোয়া উপায়

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সবুজ ও কালো চা রক্তের কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তের জমাট বেঁধে যাওয়া প্রতিহত করে। সবুজ চায়ের কেটচিনস এবং কালো চায়ের থিফলেভিনস নামের উপাদান এভাবেই দেহকে বিভিন্ন কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি থেকে মুক্ত রাখে।

বেশি কোলেস্টেরল মানেই উচ্চ রক্তচাপ। এ কারণে দুটোকেই নীরব ঘাতক বলা হয়। নীরব বলার কারণ হলো, আপনি হয়তো টেরও পাবেন না যে ভয়ংকর মাত্রায় কোলেস্টেরল নিয়ে ঘুরছেন আপনি। অগোচরে ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। তাই নিজ উদ্যোগেই নিজের কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।

ঝুঁকি

কোলেস্টেরলের আধিক্যজনিত কারণে হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, ক্রনিক কিডনি ডিজিজ ও বুকে ব্যথার মতো সমস্যা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। এ জন্য ওষুধপথ্যসহ জীবনযাপন পরিবর্তনের নানা পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রতিরোধ

কাজেই আগে থেকে প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণই বুদ্ধিমানের কাজ। সচেতন হয়ে কোলেস্টেরলের আনাগোনা ঠেকিয়ে রাখতে হবে। সুষম খাদ্য তালিকাকে অবহেলা করা যাবে না।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখবে যেসব খাবার

জইচূর্ণ বা ওটমিল চেনেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। সচরাচর ওজন কমানোর জন্য অনেকেই ওটমিল খেয়ে থাকলেও এই খাবারটির অন্যতম গুণ হলো, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখা।

এ ছাড়া ডায়াবেটিস, হৃদরোগ কিংবা মাইগ্রেন এর মতো বহু জটিল রোগও নিয়ন্ত্রণে রাখে ওট। গবেষণায় দেখা গেছে, রক্তে উচ্চ কোলেস্টেরল রয়েছে- এমন ব্যক্তিরা প্রতিদিন মাত্র তিন গ্রাম ওট খেলে খুব দ্রুত তাদের দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক হয়।

সয়াবিন

সয়াবিনে থাকা আমিষ বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগকে দূরে রাখে। এর হাইপারকোলেস্টেরোলেমিয়া নামের উপাদানটি রক্ত থেকে দূষিত কোলেস্টেরল-এলডিএল তাৎপর্যপূর্ণ রকম কমিয়ে ফেলে এবং রক্তের ভালো কোলেস্টেরল-এইচডিএল বাড়িয়ে দেয়। ধমনিতে জারণ প্রক্রিয়া প্রতিহত করতে দূষিত কোলেস্টেরলের জারণ রোধ করে।

সবুজ চা

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, চা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। সবুজ ও কালো চা রক্তের কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ এবং রক্তের জমাট বেঁধে যাওয়া প্রতিহত করে। সবুজ চায়ের কেটচিনস এবং কালো চায়ের থিফলেভিনস নামের উপাদান এভাবেই দেহকে বিভিন্ন কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি থেকে মুক্ত রাখে।

বার্লি

সুস্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ করে হূৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখার অনন্য উপাদান হলো বার্লি। রক্তে কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষেত্রে জইয়ের চেয়েও বেশি কার্যকর এই বার্লি। রক্তে উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল থাকলে তা ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনার ক্ষমতা রাখে বার্লি।

ইসবগুল

কোলেস্টেরলের যৌগে থাকা বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর উপাদান দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ইসবগুলের ভুসি। উচ্চমাত্রার আঁশজাতীয় এই খাবারটি সুস্থ রাখে হূৎপিণ্ডকে।

কমলার রস

টকমিষ্টি স্বাদের কমলার রস কোলেস্টেরল কমানোয় অত্যন্ত উপকারী। গবেষকরা জানিয়েছেন, কমলার রস হাইপারকোলেস্টেরোলেমিয়া রক্তের লিপিড প্রোফাইলের উন্নতি ঘটায়। এর কারণ হচ্ছে- কমলার রসে ভিটামিন সি, ফোলেট এবং হেসপিরিডিনের মতো ফ্লেভনয়েড থাকে।

কাঠবাদাম

হৃদস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ফাইবার থাকে কাঠবাদামে, যা ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএলের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ২০১১ সালে নিউট্রিশন রিভিউতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, কাঠবাদামের মতো গাছের বাদাম খাওয়া এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে সাহায্য করে। এর ফলে করোনারি ডিজিজ হওয়ার ঝুঁকি ৩ থেকে ৯ শতাংশ কমে।

এছাড়াও পাকা আম, তালমাখনা কিংবা কালোজিরা গুড়া ও আমলকি রক্তের কোলেস্টেরলকে কমানোর জন্য অনেক উপকারী।