২৬ শে মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস? 0 212

২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়, যা দেশটির জাতীয় পরিচয়ের একটি মূল স্তম্ভ। ১৯৭১ সালের এই দিনে, বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের দীর্ঘমেয়াদি শোষণ ও অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সশস্ত্র সংগ্রামে নেমেছিল। এই দিনটি বাংলাদেশের জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের শুরু চিহ্নিত করে, যা নয় মাস ধরে চলে এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বিজয়ের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।

এই দিবসটি বাংলাদেশের জন্য একটি গভীর আবেগ, গৌরব এবং শ্রদ্ধার প্রতীক। এটি তাদের ঐতিহাসিক সংগ্রামের স্মরণে এবং সেই সংগ্রামে জীবন দেওয়া শহীদদের সম্মানে পালন করা হয়। এই দিনে, বাংলাদেশের মানুষ জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে এবং দেশজুড়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা এবং শিক্ষামূলক কর্মশালা আয়োজন করে।

২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের মাধ্যমে, বাংলাদেশের মানুষ তাদের স্বাধীনতার জন্য পূর্বপুরুষদের ত্যাগ এবং সাহসিকতার কথা স্মরণ করে। এই দিবসটি তাদের ঐতিহাসিক অর্জন এবং স্বাধীনতার মূল্যকে উদযাপন করে এবং ভবিষ্যতের প্রজন্মের মধ্যে জাতীয় ঐক্য এবং গর্বের ভাবনা জাগ্রত করে।

১৯৪৭ সালের আগস্টে প্রায় ২০০ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে বিদায় নেয় ব্রিটিশরা। কিন্তু ব্রিটিশদের এই সুদীর্ঘ শোষনের ইতিহাস ‘শেষ হইয়াও যেন হইলো না শেষ’। আর সেই স্বাধীনতা নাটকের শেষ অঙ্কের সূচনা ঘটে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ- যার মাধ্যমে পশ্চিম পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ নামক নতুন এক ভূখণ্ড।

২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস তা প্রায় সবাই জানে। কিন্তু স্বাধীনতা দিবসের কারণ বা এর পেছনের ইতিহাসটা কি? আমাদের মধ্যে অনেকেই সঠিকভাবে জানে না স্বাধীনতা দিবস কি। অথচ স্বাধীনতার এই সোনালী সূর্য ছিনিয়ে আনার জন্য জীবন দিয়েছেন লক্ষ লক্ষ শহীদ।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস কবে?

২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭১ সালের তাৎপর্যপূর্ণ এই দিনটিকে স্মরণ করে প্রতি বছর গভীর শ্রদ্ধা ও ভাবগম্ভীর্যের মাধ্যমে পালন করা হয় দিনটি।

স্বাধীনতা দিবসের ইতিহাস
১৯৪৭ সালে ধর্মের ভিত্তিতে জন্ম নেয় ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি রাষ্ট্র। কিন্তু ভারতের পশ্চিমে অবস্থিত পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব দিকের ভূখণ্ড তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) মধ্যে বৈরীতার হাওয়া দেখা যাচ্ছিলো শুরু থেকেই। বিশেষ করে অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী পশ্চিম পাকিস্তান ভাষাসহ চাকরি ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের সাথে বৈষম্যের আচরণ করতে থাকে- যার ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে একটা অনিবার্য সংঘাতের দিকে মোড় নেয় পরিস্থিতি।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান সরকার গভীর রাতে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) নিরীহ জনগণের উপর হামলা চালায় ও গ্রেপ্তার করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার শেখ মুজিবুর রহমানকে। তবে গ্রেপ্তারের কিছু আগেই ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন। ঘোষণাটি নিম্নরুপ:


এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উত্খাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক।


২৬শে মার্চ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রে শেখ মুজিব এর স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি মাইকিং করে প্রচার করা হয়। পরে ২৭শে মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে পুনরায় স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

কবে থেকে স্বাধীনতা দিবসের শুরু হয়েছে?
১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ থেকে স্বাধীনতা দিবসের মাধ্যমে সূচনা হয় রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের। দীর্ঘ নয় মাসের এই যুদ্ধের মাধ্যমে অনেক ত্যাগ ও রক্তের মাধ্যমে আমরা বিজয় লাভ করি ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর। অর্জিত হয় মহান স্বাধীনতা। তারপর থেকেই প্রতিবছর ২৬ মার্চকে পালন করা হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে।

২৬ শে মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কবে?
২৬ শে মার্চ কি দিবস- তা এখন আমরা সবাই জানি। কিন্তু ২৬ মার্চ কে স্বাধীনতা দিবস ঘোষনা করা হয় কখন তা আমরা অনেকেই জানি না। দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক বিশেষ প্রজ্ঞাপনে ২৬ মার্চকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করার ঘোষণা দেয়া হয় এবং সরকারিভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য
জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। এই দিনটি প্রত্যেক বাংলাদেশীর জীবনে বয়ে আনে একই সঙ্গে আনন্দ-বেদনা-গৌরবের এক অম্ল-মধুর অনুভূতি। একদিকে হারানোর কষ্ট অন্যদিকে মুক্তির আনন্দ। তবে শেষ পর্যন্ত সবকিছু ছাড়িয়ে স্বাধীনতা প্রাপ্তির অপার আনন্দই বড় হয়ে ওঠে প্রতিটি বাঙালির কাছে। গৌরবোজ্জ্বল এই দিনটি প্রতিবছর আসে আত্মত্যাগ, আত্মপরিচয় ও ঐক্যের বার্তা নিয়ে। সেই সাথে স্মরণ করিয়ে দেয় আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য। নব উদ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা নিয়ে আসে এই দিন। আমাদের উচিত এই দিনটিকে শক্তিতে পরিণত করে নতুন দিনের পথে এগিয়ে চলার।

Previous ArticleNext Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

জামায়াত কি তবে শক্তি গুছিয়ে ফেলেছে? 0 784

জামায়াত ইসলামী

দ্য ডিপ্লোম্যাটের নিবন্ধ
নিপীড়নের মধ্যেও শক্তি সঞ্চয় করেছে জামায়াত

চলতি বছরের জুন মাসে জামায়াতে ইসলামী রাজধানী ঢাকায় একটি সমাবেশ করেছিল। নিউজ ফুটেজে দেখা যায়, সেখানে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। সেটি ছিল এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে দলটির প্রথম কোনো সমাবেশ। সমাবেশটি কঠিন এক বার্তা দিয়েছে। গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের চাপে থেকে, নিপীড়নের শিকার হয়েও দলটি টিকে আছে।

জামায়াত বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে সংগঠিত ইসলামী রাজনৈতিক দল। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে দলটি পাকিস্তানকে সহযোগিতা করেছিল। দলটির বেশ কয়েকজন নেতা যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যায় জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)- এর সাবেক নির্বাচনী মিত্র জামায়াত ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারের অংশ ছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর, বিরোধী দলগুলোকে বিশেষ করে জামায়াতকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রাখা হয়েছিল এবং ১৫ বছর ধরে তা চলমান আছে।


৭১’র যুদ্ধে বেসামরিক মানুষের ওপর চালানো ভয়াবহ সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) নামের একটি ‘ডমেস্টিক কোর্ট’ গঠন করে। আইসিটির তদন্ত অনুযায়ী, পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের বিরুদ্ধে গণহত্যামূলক অপরাধ চালানোর জন্য জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করেছিলেন। আইসিটি জামায়াত নেতাদের দোষী সাব্যস্ত করে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কিংবা মৃত্যুদণ্ড দেয়।

প্রক্রিয়াগত ত্রুটির জন্য প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ওই বিচারের সমালোচনা করে। আইসিটি’র ট্রায়াল এবং নেতাদের দোষী সাব্যস্ত হওয়া জামায়াতকে কঠিনভাবে আঘাত করে। দলটি বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে হারায়। এ ছাড়াও, আইসিটি দ্বারা দোষী সাব্যস্ত জামায়াতের দুই নেতার ছেলেকে ‘জোরপূর্বক গুম করা হয়’। তাদের একজন মীর আহমেদ বিন কাসেম। তার পিতা প্রয়াত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী প্রথমে আইসিটি দ্বারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, পরে তাকে ফাঁসি দেয়া হয়। অন্যজন, সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী। তার পিতা জামায়াতের সাবেক প্রধান গোলাম আযম। আইসিটি তাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল, পরে তিনি মারা যান। আজও ওই ছেলেদের হদিস কেউ জানে না। যদিও সরকারি বাহিনী তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল বলে পরিবারগুলোর অভিযোগ।


আইসিটি’র বিচার এবং নিজেদের নেতাদের রায়ের বিরুদ্ধে সহিংস প্রতিবাদ করতে গিয়ে জামায়াত এবং দলটির ছাত্র সংগঠন-ইসলামী ছাত্রশিবির পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের অনেক কর্মীকে হারিয়েছে। জামায়াত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ বছরে তাদের প্রায় ২৪০ জন কর্মী আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর হাতে নিহত হয়েছেন। জামায়াত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১৪ হাজারের বেশি এবং ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে সাড়ে ৯ হাজার মামলা রয়েছে। নারীসহ দলটির ৯০ হাজারের বেশি নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছেন। দ্য ডিপ্লোম্যাট স্বাধীনভাবে এই পরিসংখ্যান যাচাই করতে পারেনি। জামায়াতের অনেক কর্মী স্থানীয়ভাবে আত্মগোপনে রয়েছেন। অনেকেই ইউরোপ, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোতে নির্বাসনে রয়েছেন।

উপরন্তু, হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের নির্দেশ দিলে দলটির ওপর দিয়ে প্রচণ্ড ঝড় বয়ে যায়। আওয়ামী লীগের মিত্র তরীকত ফেডারেশনের দায়েরকৃত একটি রিট পিটিশনের পর এই রায় দেয়া হয়। বলা হয়েছিল, ‘জামায়াত ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল এবং দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না’। জামায়াতকে নির্বাচন করতে বাধা দেয়া হয়। সংগঠন এবং কার্যক্রমের উপর সুসজ্জিত আক্রমণের পরও জামায়াত টিকে গেছে বলেই মনে হচ্ছে। জুনের সমাবেশ দেখিয়েছে যে, দলটি এখনো বিশাল সমাবেশ এবং বিক্ষোভ সংগঠিত করার ক্ষমতা রাখে।

পুলিশের গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে ডেইলি স্টারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে জামায়াতের রুকন বা স্থায়ী সদস্য সংখ্যা ২৩,৮৬৩ থেকে তিন গুণ বেড়ে ৭৩,০৪৬ হয়েছে। অন্য কথায়, নিপীড়নের মধ্যেও জামায়াত উন্নতি লাভ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্কলার এবং দলটির একজন রুকন বা স্থায়ী সদস্য নকিবুর রহমান। তিনি দ্য ডিপ্লোম্যাটকে বলেন, “জামায়াত একটি আদর্শভিত্তিক দল। আর তাই, ক্রমাগত নিপীড়নে থেকেও দলটি নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে না’। নকিবুর জামায়াতের সাবেক আমীর মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে, দলটির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
জামায়াত বিষয়ে গবেষকরা দলটির টিকে থাকার কৌশলের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। দলটি তার রাজনৈতিক কর্মকা-কে কমিয়ে আনার চেষ্টা করেছে, মানুষকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য দলে যোগদানে আহ্বান জানানোর পরিবর্তে ‘দাওয়াহ’কে প্রসারিত করেছে এবং ধর্মীয় পথ গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর পথ বেছে নিয়েছে। নির্বাচনের মাঠে টিকে থাকতে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনগুলোতে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে দলের কর্মীরাও সদা তৎপর।

জামায়াতের দলীয় ওয়েবসাইট বলছে যে, তারা বাংলাদেশকে একটি ইসলামী কল্যাণধর্মী রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে আল্লাহ্ নির্ধারিত এবং নবী মুহাম্মদের দেখানো ইসলামী জীবনবিধি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে। যার ফলস্বরূপ, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পাশাপাশি পরকালেও মুক্তি পাওয়া যাবে।’ দলীয় সংবিধান বলছে ‘দলটি শৃঙ্খলামূলক এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা তৈরি করবে এবং দলের পক্ষে জনমত গঠনের প্রচেষ্টা চালাবে।’

একাত্তরে জামায়াতের ভূমিকার কথা বাংলাদেশের অনেকেই ভুলে যান নি। সমালোচকদের অভিযোগ- দলটি সংখ্যালঘু বিরোধী এবং সহিংসতা ছড়ায়, হিন্দু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে দলটি সহিংসতা ছড়ায়। জামায়াত নিজ দৃষ্টিভঙ্গিতে গোঁড়া বলেও অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে, কেবল মুসলমানরাই দলটির সদস্য হতে পারেন এবং দলটি মনে করে কোনো নারী রাষ্ট্রের প্রধান হতে পারবেন না। যদিও, জামায়াত ‘সংখ্যালঘু বিরোধী’ বিষয়টি স্বীকার করে না। নকিবুর বলেন, ‘মুসলমান হিসেবে আমাদের বিশ্বাস, সংখ্যালঘুদের রক্ষা করা আমাদের ধর্মীয় দায়িত্ব।’ দলটির বর্তমান নেতারা নিজেদের (দলের) আগের অবস্থান থেকে (বিশেষ করে ১৯৭১ সালের যুদ্ধ বিষয়ে) দূরে রাখার চেষ্টা করছেন।

ডিডাব্লিউ’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জামায়াতের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ তাহের বলেছেন, ২০২৩ সালের জামায়াত অতীতের চেয়ে আলাদা। তাহের বলেন, ‘হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, জামায়াত, আওয়ামী লীগ, বিএনপি সহ সমগ্র জাতির জন্যই ১৯৭১ গর্বের এক বিষয়।’ যদিও তিনি ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তানকে সহযোগিতার জন্য ক্ষমা চাওয়া থেকে বিরত থাকেন, যেটি জামায়াতের সমালোচকদের দীর্ঘদিনের দাবি। সম্ভবত, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জামায়াতের বক্তব্যের পরিবর্তনটি কৌশলগত।

২০২০ সালে, জামায়াতের বেশ কয়েকজন কর্মী আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি গঠনের জন্য দল ছাড়েন। এবি পার্টির আন্তর্জাতিক বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত আসাদুজ্জামান ফুয়াদের মতে, ১৯৭১ সালের যুদ্ধে জামায়াতের ভূমিকা ছিল বিভক্তির মূল বিষয়। দ্য ডিপ্লোম্যাটকে তিনি বলেন, যারা এবি পার্টি গঠনের জন্য জামায়াত ত্যাগ করেছিলেন তারা মনে করেন জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া, নারী ও সংখ্যালঘুদের বড় বড় পদে নিতে উৎসাহিত করে দলকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করা এবং রাজনীতি থেকে ধর্মকে আলাদা করা প্রয়োজন।

যদিও এবি পার্টির কারণে জামায়াত খুব বেশি সমর্থন হারায়নি, তবে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের বিষয়ে দলটির বক্তব্যের পরিবর্তন আরও বিভক্তিকে ঠেকানোর লক্ষ্যে হতে পারে। আঞ্চলিকভাবে ভারত জামায়াতের ঘোরবিরোধী। প্রবীণ ভারতীয় সাংবাদিক এস.এন.এম. আবদি যেমন বলেছেন, “একের পর এক বিভিন্ন ভারতীয় সরকার জামায়াতকে পাকিস্তানের প্রক্সি, আরও নির্দিষ্টভাবে বললে আইএসআই (পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা)-এর পুতুল ভিন্ন অন্য কিছু মনে করে নি।”

লন্ডনের স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের সিনিয়র লেকচারার অবিনাশ পালিওয়াল দ্য ডিপ্লোম্যাটকে বলেন, “বাংলাদেশের ইসলামপন্থিদের জন্য জামায়াতের রক্ষণশীল ভিত্তি এবং মতাদর্শিক সহায়তাকে নয়াদিল্লি নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখে। আদর্শগত এবং নিরাপত্তা-সম্পর্কিত উভয় কারণেই ভারতের পক্ষে এই ধরনের দলকে ধারণ করা কঠিন। যার কারণে (ভারত) প্রায়ই আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে থাকে, এমনকি বাংলাদেশের নির্বাচনী স্বচ্ছতার মূল্য দিয়ে হলেও।”

জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম সম্প্রতি বাংলাদেশে ভারতের ‘আধিপত্য বিস্তার প্রচেষ্টার’ নিন্দা জানিয়েছেন এবং আওয়ামী লীগ দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে ভারতকে খুশি করছে বলে অভিযোগ করেছেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের নির্বাচনের আগে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বিএনপি এবং জামায়াতের মধ্যে সম্পৃক্ততার প্রকৃতি সম্পর্কে অনুমান করছেন। দীর্ঘদিন ধরেই দল দুটি মিত্র। উভয় পক্ষের সূত্র বলছে, ভবিষ্যতে (পারস্পরিক) সহযোগিতার বিষয়ে সন্দেহ থাকলেও উভয় দলই পৃথকভাবে হলেও সরকার বিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার বিষয়ে একমত।

বিএনপি জামায়াতকে ছাড়াই দেশব্যাপী ব্যাপক সমাবেশের আয়োজন করছে। এভাবে (দলটি) সমালোচকদের এমন দাবিকে অস্বীকার করছে যে- দলটি জামায়াতের মাঠের শক্তির উপর নির্ভরশীল। দলটির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সম্প্রতি সরকারবিরোধী বিক্ষোভের জন্য ১৯টি ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে একটি জোট গঠন করেছে যাতে ছাত্রশিবিরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এমন এক জায়গা থেকে জামায়াত কীভাবে বিকশিত হবে সেটি অনুমান করা কঠিন। তবে, দলটি যে সাংগঠনিকভাবে এখনো শক্তিশালী সেটি স্পষ্ট। দলটি হয়তো আওয়ামী লীগের দমন-পীড়নে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছে, কিন্তু আওয়ামী লীগ-বিরোধী মনোভাব থেকেও দলটি লাভবান হয়েছে।
নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে জামায়াত সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছে। তবে, নিজ অনুকূলে রায় পাওয়ার ব্যাপারে দলটি আশাবাদী নয়। দলীয় সূত্র দ্য ডিপ্লোম্যাটকে জানিয়েছে, আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তারা দলের নাম পরিবর্তনের কথা ভাবছে।

[লেখাটি ওয়াশিংটন ডি.সি. ভিত্তিক খ্যাতনামা ‘দ্য ডিপ্লোম্যাট’ ম্যাগাজিনে ২৯শে আগস্ট প্রকাশিত হয়েছে। লিখেছেন ডিপ্লোম্যাটের কন্ট্রিবিউটিং অথর, সিডনি-ভিত্তিক স্কলার এবং দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতির বিশ্লেষক মুবাশ্বার হাসান। অনুবাদ করেছেন তারিক চয়ন]

সেরা ৫ হুমায়ুন আহমেদের বই 0 468

হুমায়ুন আহমেদ – একটি নাম, একটি ইতিহাস। বাংলা সাহিত্যের একজন কিংবদন্তী। নাটক, গল্প, উপন্যাস, সিনেমা – যেদিকে হাত দিয়েছেন সেখানেই ফলেছে সোনা। তার প্রতিটি কাজ, প্রতিটি লেখনী মানুষের কাছে হয়েছে জনপ্রিয়, পাঠকদের কাছে হয়েছে স্বপ্নের বাস্তব। মাত্র ৬৪ বছরের জীবনে নিজেকে স্থাপন করেছেন বাংলা সাহিত্যের নতুন জগতের সম্রাট হিসেবে। আজ ব্রাকেট পোষ্টের পাঠকদের জন্য আজ থাকছে হুমায়ুন আহমেদের জনপ্রিয় ও সেরা ৫ টি বই নিয়ে আলোচনা।

০১। শংখনীল কারাগার ১৯৭৩

শঙ্খনীল কারাগার হুমায়ূন আহমেদের প্রাথমিক লেখক জীবনের একটি সমকালীন উপন্যাস। এটি বাংলাদেশ সৃষ্টির পরেই খান ব্রাদার্স, অন্যপ্রকাশ প্রকাশনী থেকে প্রথম ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯৯২ সালে শঙ্খনীল কারাগার নামে উপন্যাসের কাহিনী নিয়ে চলচ্চিত্র মুক্তি পায়।

শংখনীল কারাগার

চরিত্র
খোকা (কথক)
রাবেয়া
মন্টু
রুনু
ঝুনু
কিটকি
নিনু
ওভারশীয়ার কাকু
সুহাসিনী মাসি
শিরিন সুলতানা (খোকার মা)
খোকার ছোটখালা
খোকার বড়মামা, মনসুর
আজহার হোসেন (খোকার বাবা)
আবিদ হোসেন (রাবেয়ার আসল বাবা)

কাহিনী সংক্ষেপ
উপন্যাসের মূল কথক ‘খোকা’। তারা মোট ছয় ভাইবোন। তার বড় বোন রাবেয়া। তার বাবা আর রাবেয়ার বাবা ভিন্ন দুই ব্যক্তি। রাবেয়ার মায়ের আগে এক ধনী ব্যাক্তির সাথে বিয়ে হয়েছিল। সেই পরিবারে জন্মায় রাবেয়া। রাবেয়ার বাবার সাথে রাবেয়ার মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

খোকার ছোট ভাই মন্টু লেখাপড়ায় অমনোযোগী। কিন্তু সে একজন কবি। তার চমৎকার সব কবিতা ছাপা হতো পত্রিকায়। এভাবেই দিন চলে যেতে থাকে তাদের। কাছের মানুষগুলো ধীরে ধীরে দূরে সরে যেতে থাকে। রাবেয়া শহরের এক মহিলা হোস্টেলের সুপারিন্টেনডেন্ট হয়ে পরিবার থেকে কিছুটা দূরে চলে যায়। মন্টুও তার সদ্য যৌবনের বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর খোকা ক্রমেই পুরানো দিনের প্রাচুর্যের স্মৃতি অন্তরে জমিয়ে রেখে নিঃসঙ্গতার বেদনায় ডুবতে থাকে।

০২। মেঘ বলেছে যাব যাব ১৯৯৭

মেঘ বলেছে যাব যাব হুমায়ূন আহমেদের একটি উপন্যাস। ১৯৯৭ সালের বইমেলায় উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয়। ১৯৯৭ সালে অবসর প্রকাশনা বইটি প্রকাশ করে।

চরিত্রসমূহ
হাসান – প্রধান চরিত্র
তিতলী – হাসানের প্রেমিকা
তারেক – হাসানের ভাই
রীনা – তারেকের স্ত্রী
লাবনী – তারেকের কলিগ
লায়লা – হাসানের বোন
হিশামুদ্দিন – কোটিপতি ব্যবসায়ী
চিত্রলেখা – হিশামুদ্দিনের মেয়ে
সুমি – হাসানের ছাত্রী
শওকত – তিতলীর স্বামী।
নাদিয়া – তিতলীর বোন
হাসানের মা-বাবা, তারেকের দুই ছেলে, তিতলীর মা-বাবা, লায়ালার স্বামী

কাহিনী সংক্ষেপ
হাসান একজন বেকার। তবে পুরো পুরি নয়। কোটিপতি হিশামুদ্দিনের জীবনী সে লিখছে। প্রতি বুধবারে হিশামুদ্দিন সাহেব হাসানকে এক ঘণ্টা করে জীবনী বলবেন বলে কথা হয়েছিল। প্রতি ঘণ্টা ৬০০ টাকা হিসেবে দেওয়ার কথা থাকলেও হিশামুদ্দিন সাহেব কখনো তাকে এক ঘণ্টা সময় দেন না। তবে হিশামুদ্দিন সাহেব হাসানকে অনেক পছন্দ করতেন। একসময় তিতলীদের পাশের বাসায় থাকত হাসানের পরিবার। সেই থেকে তাদের পরিচয়। পরে একে অপরকে ভালোবেসে ফেলে তারা। তবে হাসান বেকার হওয়ায় তিতলীর বাবা মতিন সাহেব ব্যপারটা পছন্দ করত না।

চিত্রলেখা তার বাবার অফিসে বসতে শুরু করে। সেখানেও নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় তাকে। একসময় নেপাল বেড়াতে যায় তিতলী আর শওকত। সেখানে এক সকালে নিজেকে শওকতের কাছে বিলিয়ে দেয় তিতলী। অন্যদিকে হাসানের ব্রেন টিউমার ধরা পরে।

০৩। আমিই মিসির আলী ২০০০

হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট চরিত্রগুলোর মধ্যে মিসির আলি বেশ জনপ্রিয়। মিসির আলি কাহিনীগুলোও বেশ থ্রিলিং। মিসির আলি সিরিজের বইগুলোর মধ্যে আমিই মিসির আলি দ্বাদশ প্রকাশনা। একবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একুশে বই মেলায় অন্যপ্রকাশ প্রকাশনী হতে বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়।

আমিই মিসির আলী ২০০০

চরিত্রসমূহ
মিসির আলি
মাহাবা বেগম লিলি
এস. সুলতান হক – লিলির স্বামী
বরকত – লিলিদের বাড়ির দারোয়ান
অশ্বিনী রায় – লিলিদের বাড়ির আদি মালিক ও সিরিয়াল কিলার
সালমা – স্যাম্পল নাম্বার ৭

কাহিনী সংক্ষেপ
মিসির আলির টেকনাফ বেড়াতে যাওয়ার কথা থাকলেও লিলির স্বামীর টোপ গিলে তিনি চলে গেলেন এস.সুলতান হকের বাড়িতে। সেখানে গিয়ে সামান্য অভিভূত হলেন কিন্তু সেখানে তাকে আটকে রাখা হল। তিনিই ছিলেন সুলতানের গবেষণার সাবজেক্ট। মিসির আলিকে ভয় দেখানোর জন্য সালমা নামের এক পনের-ষোল বছর বয়সী কিশোরীকে বলি দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে মিসির আলি তাকে বাঁচানোর চেষ্টা শুরু করেন।

০৪। জোছনা ও জননীর গল্প ২০০৪

জোছনা ও জননীর গল্প বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে হুমায়ুন আহমেদ রচিত একটি উপন্যাস। ফেব্রুয়ারি ২০০৪ সালে একুশে বইমেলায় বাংলাদেশের অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত হয়।

জোছনা ও জননীর গল্প

উপন্যাসের কাল্পনিক চরিত্রসমুহ
শাহেদ – এটিও বাস্তব একটি চরিত্র তবে উপন্যাসে লেখক সত্যের সাথে কল্পনা যোগ কয়েছেন
ইরতাজউদ্দিন – শাহেদের বড় ভাই
আসমানী – শাহেদের স্ত্রী
রুনি – শাহেদের মেয়ে
গৌরাঙ্গ – শাহেদের বন্ধু
মোবারক হোসেন – নাইমুলের শ্বশুর এবং পুলিশ ইন্সপেক্টর
নাইমুল – শাহেদের বন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধা
মরিয়ম – নাইমুলের স্ত্রী ও মোবারক হোসেনের কন্যা
কলিমুল্লাহ – কবি

কাহিনী প্লট

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সংঘটিত লেখকের নিজ জীবনের এবং নিকট সম্পর্কিত ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন ব্যক্তির বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা তিনি উপন্যাসিক আঙ্গিকে এতে ফুটিয়ে তুলেছেন। প্রকাশের পর থেকে বহুবার বইটি একুশে বইমেলার বেস্ট সেলিং বইয়ের তালিকায় প্রথম সারিতে ছিল।


০৫। দেয়াল ২০১২
দেয়াল লেখক হুমায়ুন আহমেদ রচিত সর্বশেষ উপন্যাস। লেককের মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট ভিত্তিক উপন্যাস। এটি তার রচিত সর্বশেষ উপন্যাস যা তার মৃত্যুর ১ বছর পর অন্যপ্রকাশ প্রকাশনী থেকে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।

দেয়াল উপন্যাস

কাহিনী ও চরিত্র সংক্ষেপ

দেয়াল উপন্যাসটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের পটভুমিতে রচিত। এখানে লেখক বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে সমসাময়িকভাবে নিজেকেও উপস্থাপন করেছেন। এই উপন্যাসের কয়েকটি চরিত্র হল: অবন্তি , শফিক, সরফরাজ খান, ইসাবেলা, পীর হামিদ কুতুবি, ক্যাপ্টেন শামস, হাফেজ জাহাঙ্গীর, মেজর ফারুক, মেজর ইশতিয়াক, শেখ মুজিবুর রহমান, খালেদ মোশাররফ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান, কর্নেল তাহের, মোশতাক আহমেদ, তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ডোরা রাসনা, ছানু ভাই, আওয়ামী লীগার মোজাম্মেল, মেজর নাসের, মেজর রশীদ, আন্ধা পীর, মেজর ডালিম, ভারতীয় গুপ্তচর কাও, রাধানাথ, চা বিক্রেতা কাদের মোল্লা, শামীম শিকদার প্রমুখ।