অফিসেই হোক স্বাস্থ্যকর ডায়েট | সঠিক ডায়েট চার্ট ২০২৩ 0 872

সঠিক ডায়েট চার্ট এক নজরে

আজকের দিনে বেশির ভাগ মানুষ করপোরেট দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত। ফলে আট থেকে দশ ঘণ্টা কাজ করাই এখন সবার নিয়মিত রুটিন। তাই সকালের নাস্তা থেকে রাতের খাবার কোনোটাই স্বাস্থ্যসম্মতভাবে হয়ে ওঠে না। এমনকি সপ্তাহের শেষে একদিনের ছুটিতে ব্যায়াম বা জিম কোনোটা করতেও মন চায় না।

তাই শরীরের হাজারও সমস্যা বাড়িয়ে নিজেকে শয্যাশায়ী না করতে চাইলে জেনে নেই-অফিসে সারাদিনের ব্যস্ততার মধ্যে কীভাবে সঠিক খাদ্যগ্রহণ করে নিজেকে সুস্থ রাখা যায়।

বাড়ির বানানো খাবার

শরীর সুস্থ রাখা তো বটেই পকেট সুস্থ রাখতেও বাড়ির বানানো খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা বাহিরে থেকে যে সব খাবার কিনে খাই, তা বেশিরভাগ সময়েই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হয়। ফলে শরীর তো খারাপ হয়ই, সঙ্গে পকেটও ফাঁকা হয়। তাই বাড়ির পরিষ্কার পাত্রে পরিমিত মশলায় বানানো খাবারই অফিসে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।

ডেস্কে পানির বোতল

আমাদের বহুবিধ রোগ সারানোর অন্যতম উপায় হলো প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা। সারাদিন কাজের চাপের মধ্যেও শরীর যাতে সতেজ থাকে তার জন্য সঠিক পরিমাণে পানি খাওয়া খুবই প্রয়োজন। কারণ, পানির অভাবে ডিহাইড্রেশন হলে কাজ করার ক্ষমতা তো কমেই যায়, একইসঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য, কিডনির সমস্যা এবং মাংসপেশীর নানা সমস্যা দেখা দেয়।

বাদাম রাখুন স্ন্যাক্সে

আমরা নিজেরাও জানি না কখন হঠাৎ করে আমাদের খিদে পায়। অন্যদিকে অফিসের কাজের চাপে পেট ভরে খাবার খাওয়ারও সময় হয় না। তাই চটজলদি হাতের কাছে থাকে তেলেভাজা চিপস নয়তো কোল্ড ড্রিঙ্কস। এর ফলে শরীরের অবস্থা আরও খারাপ হয়। তাই কাজের চাপেও শরীরকে সুস্থ রাখতে চাইলে বাদ দিতে হবে তৈলাক্ত খাবার। বাদামে আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া যায়। তাই যখন-তখন খিদে মেটাতে ব্যাগে রাখাই যায় বাদাম ও ছোলা জাতীয় পুষ্টিকর খাবার।

পরিমাণ মতো ফল খান

ফলের মধ্যে উপস্থিত ফাইবার শরীরের জন্য যেমন প্রয়োজনীয়, তেমনি শরীরকে ভালো রাখতে ফল খাওয়া একান্ত জরুরি। শরীরকে সব সময় ফিট রাখতে তাই প্রত্যেকেরই ফল খাওয়া উচিত। এ ছাড়া প্রতিদিন এক গ্লাস দুধের সঙ্গে পরিমাণ মতো ফল আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

ঝটপট ওটমিল

কাজের চাপে যখন খাওয়ার সময় থাকে না, তখন পেট ভরানোর জন্য সব থেকে উপযোগী হলো ওটমিল। সাধারণ ওট বাদাম এবং শুঁকনো ফলের সঙ্গে খেলে পেটও ভরে আবার শরীরও সুস্থ থাকে। এ ছাড়া ওট আমাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা সঠিক রাখতে সাহায্য করে।

জাঙ্ক ফুড বাদ দিন

জাঙ্ক ফুড আমাদের শরীর শুধু নয়, আমাদের মানসিক দিক থেকেও দুর্বল বানিয়ে দেয়। চটজলদি জীবনের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে ফাস্ট ফুড আমাদের দিনে দিনে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এইসব খাওয়ার ফলে আমাদের মধ্যে স্থুলতা, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, দাঁতের সমস্যা দেখা দেয়। তাই সুস্থ থাকতে হলে সবার আগে জাঙ্ক ফুডকে বিদায় জানাতেই হবে।

Previous ArticleNext Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চা খাওয়ার উপকারিতা – এক কাপ সুস্থতার পানীয় 0 232

চা খাওয়ার উপকারিতা

চা, বিশ্বব্যাপী প্রিয় এক পানীয়, শুধু তার স্বাদের জন্যই নয়, বরং এর স্বাস্থ্যগত উপকারিতা দ্বারা বিখ্যাত। এই পোস্টে, আমরা চা খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করবো।

১. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস
চা বিশেষ করে সবুজ চা ও কালো চা, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি শরীরের ক্ষতিকারক ফ্রি র‌্যাডিক্যালগুলি থেকে রক্ষা করে এবং বয়সের প্রভাব হ্রাস করে।

২. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
চা খাওয়া হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদস্পন্দনের সামঞ্জস্য বজায় রাখে।

৩. মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতি
চায়ে থাকা ক্যাফেইন ও থিয়ানিন মানসিক সতেজতা ও ফোকাস বাড়ায়। এটি মানসিক ক্লান্তি কমাতে এবং মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে।

৪. ওজন হ্রাসে সাহায্যকারী
বিভিন্ন গবেষণা অনুসারে, নিয়মিত চা পান ওজন হ্রাসে সাহায্য করে। বিশেষ করে সবুজ চা মেটাবলিজমে উন্নতি ঘটায় এবং ফ্যাট বার্নিং প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।

৫. পাচন প্রক্রিয়া উন্নতি
চা পাচন তন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নতি সাহায্য করে। এর প্রাকৃতিক উপাদান পেটের সমস্যা যেমন অম্বল ও বদহজম নিরাময়ে সাহায্য করে।

৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
চায়ে থাকা বিভিন্ন উপাদান ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এটি সর্দি-কাশি ও অন্যান্য সাধারণ সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়।

চা খাওয়ার অপকারিতা – সাবধানতা ও সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা

চা বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় একটি পানীয়, কিন্তু অতিরিক্ত বা অনিয়মিত ভাবে চা পানের কিছু অপকারিতা রয়েছে। চা পানের অপকারিতা সম্পর্কে জানা এবং এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। সঠিক মাত্রা ও সঠিক সময়ে চা পান করলে, এর অপকারিতা এড়িয়ে চলা সম্ভব। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য সচেতনতা ও সাবধানতা অপরিহার্য।

১. অতিরিক্ত ক্যাফেইনের সমস্যা

চা, বিশেষ করে কালো চা ও সবুজ চা, ক্যাফেইন সমৃদ্ধ। অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ হৃদস্পন্দন বাড়াতে, অনিদ্রা, মাথা ব্যথা, এবং চিন্তা-উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।

২. হজমের সমস্যা

খালি পেটে চা পান অম্বল ও পেটের অস্বস্তি তৈরি করতে পারে। চায়ের ট্যানিন অম্লীয়তা বাড়িয়ে দিতে পারে, যা পেটের সমস্যা সৃষ্টি করে।

৩. লৌহ শোষণে বাধা

চা খাওয়ার ফলে লৌহের শোষণে বাধা দেয়, বিশেষ করে যদি খাবারের সঙ্গে বা খাবারের পরে চা পান করা হয়। এটি আয়রন ঘাটতির সমস্যা তৈরি করতে পারে।

৪. হাড়ের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব

কিছু গবেষণা বলছে যে অতিরিক্ত চা পান হাড়ের ঘনত্ব কমিয়ে দিতে পারে, যা অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ায়।

৫. অতিরিক্ত চিনির ব্যবহার

অনেকে চায়ে প্রচুর পরিমাণে চিনি মেশান, যা ডায়াবেটিস ও ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

৬. দাঁতের উপর প্রভাব

চা পান দাঁতের উপর দাগ ফেলতে পারে এবং এর অ্যাসিডিক প্রকৃতি দাঁতের এনামেল ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ায়।

সংক্ষেপ

চা খাওয়ার উপকারিতা অসীম। এটি শুধু এক কাপ পানীয় নয়, বরং এক কাপ সুস্থতা। তাই, আসুন আমরা এই অসাধারণ পানীয়কে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ করে নিই এবং এর উপকারিতাগুলি উপভোগ করি।

এছাড়া বিশেষভাবে লাল চা, চিনি ছাড়া চা, রঙ চা, লিকার চা, দুধ চা সহ নানাবিধ চা বাংলাদেশের মানুষ পান করে থাকে। সবাই আসলে চা খাবার আগে চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা বিবেচনা করে চা পান করেন না। এটা অনেকটা পছন্দের উপর নির্ভর করে।

ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার ২০২৪ 0 675

ডেঙ্গু

ডেঙ্গু বর্তমান সময়ের সবচেয়ে পীড়াদায়ক রোগের একটি। এই জ্বরে আক্রান্ত একদিকে যেমন দূর্বল হয়ে পড়ে অন্যদিকে এর রেশ শরীরে থেকে যায় দীর্ঘদিন। আগে ডেঙ্গু বড় কোন প্রাণঘাতি রোগ না থাকলেও ২০২৩ সালে এসে সারা বাংলাদেশেই ডেঙ্গু হয়ে উঠেছে করোনার মতই বিপজ্জনক। তবে বিশ্রাম ও নিয়ম মাফিক চললে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

ডেঙ্গু প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে, ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু ফিভার এবং ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার।

ডেঙ্গু জ্বর কখন ও কাদের বেশি হয়?
মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, বিশেষ করে গরম এবং বর্ষার সময়টাতেই ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেশি থাকে। শীতকালে এই জ্বর হয় না বললেই চলে। শীতে লার্ভা অবস্থায় ডেঙ্গু/ এডিস মশা অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে। বর্ষার শুরুতেই সেগুলো থেকে নতুন করে ডেঙ্গু ভাইরাস বাহিত মশা বিস্তার লাভ করে। সাধারণত শহর অঞ্চলে অভিজাত এলাকায়, বড় বড় দালান কোঠায় এই মশার প্রাদুর্ভাব বেশি, তাই ডেঙ্গু জ্বরও এই এলাকার বাসিন্দাদের বেশি হয়। তবে ইদানীংকালে বস্তিতে বা গ্রামে বসবাসরত লোকজনেরও ডেঙ্গু হয়। ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ কে কোনভাবেই হালকাভাবে না নিয়ে দ্রুত পরীক্ষা করানো উচিত।

ডেঙ্গু জ্বরের প্রতিকার ও চিকিৎসা
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ তীব্র হলে বাসায় চিকিৎসা করার সুযোগ নেই। এমন রোগীদের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা নিতে হবে। তীব্র ডেঙ্গুতে রক্তচাপ কমে যেতে পারে, রোগীর অভ্যন্তরীণ অঙ্গ থেকে শুরু হতে পারে রক্তক্ষরণ। দ্রুত রক্তের অণুচক্রিকা (প্লাটিলেট) কমে যেতে পারে। সাধারণ ডেঙ্গুর কোনো নির্ধারিত চিকিৎসা নেই। কারও ডেঙ্গু হলে করণীয়: পূর্ণ বিশ্রাম; পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান। শরবত, ফলের রস, স্যুপ, ডাবের পানি, স্যালাইন পান; জ্বর বা ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল; অ্যাসপিরিন, আইবোপ্রোফেন কিংবা ব্যথা–বেদনানাশক ওষুধ গ্রহণ করা যাবে না। এগুলো ডেঙ্গুর রক্তক্ষরণজনিত জটিলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। ডেঙ্গু জ্বর সেরে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর যদি শরীর আরও বেশি খারাপ হতে থাকে, তবে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে; রক্ত পরীক্ষা করে অণুচক্রিকার এবং হেমাটোক্রিটের পরিমাণ জেনে নিতে হবে; রক্তের অণুচক্রিকা কমতে থাকলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে; অণুচক্রিকা ১০ হাজারের নিচে নেমে গেলে কিংবা রক্তক্ষরণ শুরু হলে রক্ত দিতে হবে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নঃ

# ডেঙ্গু জ্বর কি ছোঁয়াচে রোগ?

না। ডেঙ্গু ছোঁয়াচে রোগ নয়।

# ডেঙ্গু জ্বর কত দিন থাকে?

সাধারণত ডেঙ্গু জ্বর ৩ থেকে ৬ দিন থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

# ডেঙ্গু জ্বর হলে কি গোসল করা যাবে?

জ্বর কমাতে কোনোভাবেই অ্যাসপিরিন অথবা ব্যথানাশক এনএসএইড গ্রুপের ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না। ওষুধ ছাড়াও জ্বর কমাতে মাথায় পানি ঢালা, শরীর মুছে দেওয়া অথবা রোগীকে গোসল করাতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ

>> অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তির ঘরোয়া সমাধান <<
>> মাইগ্রেনঃ মাথার পিছনে ব্যথা হওয়ার কারণ ও প্রতিকার <<