রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে যা খাওয়া জরুরি 0 783

রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা

রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক থাকলে বিভিন্ন রোগ ও সংক্রমণ থেকে বাঁচা যায়। ভিটামিন সি শরীরের এই ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।

যেসব খাবারে পাওয়া যায়
বিভিন্ন ফল ও সবজিতে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। যেমন ফলের মধ্য়ে আছে কিউই, লেবু, কমলা, পেঁপে, পাকা আম, পেয়ারা, আঙুর, জাম্বুরা, আমলকী, আমড়া, স্ট্রবেরি। আর সবজির মধ্যে ব্রাসেলস স্প্রাউট, ব্রকোলি, মরিচ এসব। তবে মনে রাখতে হবে ভিটামিন সি তাপ-সংবেদনশীল। তাই রান্নার সময় একটু সতর্ক থাকতে হবে।

উপকারিতা
শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে ভিটামিন সি। সাধারণ সর্দি-কাশিতেও এটি অনেক উপকারী। এছাড়া ত্বক, দাঁত ও চুল ভালো রাখতে সহায়তা করে ভিটামিন সি।

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, টিউমার, ক্যানসারসহ নানান কঠিন অসুখের জন্য দায়ী ফ্রি-র‌্যাডিক্য়াল, যা ফরমালিন ও কীটনাশকযুক্ত খাবার খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে। এছাড়া দূষিত পরিবেশে বসবাস, অনেক বেশি ফাস্টফুড খাওয়া, মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ সেবন ইত্যাদি কারণেও শরীরে ফ্রি-র‌্যাডিক্য়াল তৈরি হয়। ভিটামিন সি-র মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এসব ফ্রি-র‌্যাডিক্য়ালের ক্ষতিকর প্রভাব প্রশমিত করতে পারে।

কোলাজেন তৈরি
আমাদের শরীরের মাংসপেশী, হাড়, রক্তনালী, পরিপাকতন্ত্র ও ত্বকে কোলাজেন প্রোটিন রয়েছে। এটি কোষের স্বাস্থ্য ও স্থিতিস্থাপকতা ঠিক রাখে। বয়স হলে কোলাজেনের পরিমাণ কমতে থাকে। তাই তখন ত্বক ঝুলে যেতে শুরু করে। ভিটামিন সি এই কোলাজেন তৈরিতে ভূমিকা রাখে।

লড়াই
সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে শরীরে ভিটামিন সি দরকার। কারণ শরীরের কোনও অংশে সংক্রমণ দেখা দিলে সেখানে রোগ-প্রতিরোধী কোষ পাঠাতে সহায়তা করে ভিটামিন সি।

স্কার্ভি থেকে মুক্তি
ভিটামিন সি-এর অভাবে স্কার্ভি রোগ হতে পারে। সম্ভাব্য প্রাণঘাতী এই রোগের লক্ষণগুলো হচ্ছে ক্ষত তাড়াতাড়ি না শুকানো, চুল ও দাঁত পড়া, কালশিটে দাগ পড়া ও জয়েন্টে ব্যাথা। স্কার্ভি থেকে বাঁচতে প্রতিদিন ১০ মিলিগ্রাম সমপরিমাণ ভিটামিন সি খাওয়া যথেষ্ট।

প্রতিদিন কতটুকু খাওয়া উচিত?
জার্মানির পরামর্শক সংস্থার হিসেবে একজন পুরুষের দৈনিক ১১০ মিলিগ্রাম ও একজন নারীর ৯৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খাওয়া উচিত। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে প্রতিদিন ৪০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খাওয়ার পরামর্শ দেন। সূত্র: ডয়েচে ভেলে

Previous ArticleNext Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাকা আম – পুষ্টিগুণে ভরপুর দেশী ফল 0 2174

পাকা আমের পুষ্টিগুন

চলছে আমের মৌসুম। আর পছন্দের তালিকায় সবারই কমবেশি আম পছন্দ। কাঁচা আম ও পাকা আম উভয়ই যেমন মজাদার, ঠিক তেমনি পুষ্টিসমৃদ্ধ। স্বাদে গন্ধে ভরা এই ফলটি সংরক্ষণ করে রাখা যায় বিভিন্ন উপায়ে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আমের শরবত বা জুস, মোরব্বা, আচার, জ্যাম, জেলি, আমসত্ব ইত্যাদি।

কাঁচা/ পাকা আমে আছে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ লবণ, আঁশ ইত্যাদি। নানা পুষ্টি উপাদানে ভরপুর আম, যা শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি কর্মশক্তি যোগাতেও সহায়তা করে। এর পুষ্টি উপাদান শরীরের নানাভাবে শক্তি যুগিয়ে ও ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে মানবদেহ সুস্থ রাখতে সহায়ক।

পাকা আমে কি কি উপদান আছে?

ক্যারোটিনের মাত্রা পাকা আমে বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম আমে ২৭৪০ মাইক্রো গ্রাম ক্যারোটিন থাকে। এতে ১.৩ গ্রাম আয়রন, ১৪ মি.গ্রা. ক্যালসিয়াম, ১৬ মি.গ্রা. ফসফরাস, ১৬ মি.গ্রা. ভিটামিন সি, ০.৯ মি.গ্রা. রিভোফ্লেভিন এবং ০.০৮ মি.গ্রা. থায়ামিন থাকে। এছাড়াও পাকা আমে রয়েছে ভিটামিন বি-১ ও বি-২। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ০.১ মি.গ্রা. ভিটামিন বি-১ ও ০.০৭ মি.গ্রা. বি-২ রয়েছে।

প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ০.৫ গ্রাম খনিজ লবণ থাকে। এতে কিছু পরিমাণ প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে। যেমন- প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ১ গ্রাম প্রোটিন ও ০.৭ গ্রাম ফ্যাট থাকে। আম শ্বেতসারের ভালো উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ২০ গ্রাম শ্বেতসার পাওয়া যায়।

পাকা আম খাওয়ার উপকারিতা

আমের পুষ্টিগুন

* আমের ক্যারোটিন চোখ সুস্থ রাখে, সর্দি-কাশি দূর করে।

* এর পটাশিয়াম রক্ত স্বল্পতা দূর করে ও হৃদযন্ত্র সচল রাখতে সাহায্য করে।

* ক্যালসিয়াম হাড় সুগঠিত করে, হাড় ও দাঁতের সুস্থতা বজায় রাখে।

* কার্বোহাইড্রেট কর্মশক্তি যোগায়।

* আম কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, রক্তস্বল্পতা ও প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।

* আমের আয়রন অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে।

* আম থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। দাঁত, মাড়ি, ত্বক ও হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে ভিটামিন সি।

* এই ফলের আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা হজমে সহায়তা করে। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে।

* দেশী আম রক্তে কোলেস্টেরলের ক্ষতিকর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

অনেকেই মনে করেন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের দেশী ফল যেমন, পাকা আম খাওয়া ঠিক নয়, এটা ভুল ধারণা। পরিমিত পরিমাণ আম খেলে শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা পরিমিত পরিমাণে পাকা আম খেতে পারেন।

খালি পেটে পাকা আম খাওয়া যাবে?
পাকা আমেও কিন্তু কৃত্রিম শর্করা থাকে। সকালে জলখাবারের সঙ্গে আম খাওয়া যাবে না। খালি পেটে আমের মতো মিষ্টি ফল খেলে তা এক লাফে রক্তে শর্করার পরিমাণ অনেকটা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই জালখাবার খাওয়ার বেশ কিছু ক্ষণ পর বা বিকেলে আম খাওয়া যেতে পারে।

পাকা আম বেশি পরিমানে খেলে কি হয়?
অনেক বেশি পরিমাণে দেশী আম খেলে কিছু সমস্যাও হতে পারে। আমে চিনি ও ক্যালরি বেশি থাকার কারণে আপনার ওজন বাড়তে থাকবে। যেমন ১০০ গ্রাম আমে প্রায় ৬০ ক্যালরি আছে, ১ কেজিতে ৬০০, ৪ কেজিতে ২ হাজার ৪০০ ক্যালরি, যা হয়তো আপনার সারা দিনে শরীরের মোট ক্যালরির সমান।

কালোজিরার উপকারিতা ও ওষধি গুনাগুন 0 902

কালোজিরার উপকারিতা

কালোজিয়া শুধু ছোট ছোট কালো দানা নয়, এর মধ্যে রয়েছে অবিশ্বাস্য ঐশ্বরিক শক্তি। প্রাচীনকাল থেকেই কালোজিরা মানবদেহের বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক ও প্রতিরোধক। শুধু এখানেই শেষ নয়, কালোজিরা চুলপড়া, মাথাব্যথা, অনিদ্রা, মাথা ঝিমঝিম করা, মুখশ্রী ও সৌন্দর্য রক্ষা, অবসন্নতা-দুর্বলতা, নিষ্ক্রিয়তা ও অলসতা, আহারে অরুচি এবং মস্তিষ্ক শক্তি তথা স্মরণশক্তি বাড়ায়। এ ছাড়া অনেকে গোপন শক্তি বাড়াতে যৌন চিকিৎসকের কাছে যান ও ভায়াগ্রা কিংবা যৌন শক্তিবর্ধক ঔষধ সেবন করেন! তাদেরকে বলছি আজ থেকে আর নয় ভায়াগ্রা, এক চামুচ কালোজিরাই যথেষ্ট। কারণ কালোজিরায় যৌন ক্ষমতা অপরিসীম। শুধু খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতেই নয়, আয়ুর্বেদিক ও কবিরাজি চিকিৎসাতেও কালোজিরার ব্যবহার হয়। কালোজিরার বীজ থেকে একধরণের তেল তৈরি হয়, যা মানব শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

যা আছে কালোজিরায় – কালোজিরার উপাদানঃ
কালোজিরায় রয়েছে-ফসফেট, লৌহ, ফসফরাস, কার্বো-হাইড্রেট ছাড়াও জীবাণুনাশক বিভিন্ন উপাদান। কালোজিরায় ক্যান্সার প্রতিরোধক কেরোটিন ও শক্তিশালী হরমোন, প্রস্রাব সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, পাচক এনজাইম ও অম্লনাশক উপাদান এবং অম্লরোগের প্রতিষেধক।

এবার জেনে নিই কালোজিরার উপকারিতাঃ

১. পেট খারাপ সমস্যা সমাধানঃ নিয়মিত পেট খারাপের সমস্যা থাকলে কালোজিরা সামান্য ভেজে গুঁড়ো করে ৫০০ মিলিগ্রাম হারে ৭-৮ চা চামচ দুধে মিশিয়ে সকালে ও বিকেলে সাত দিন ধরে খেলে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যায়।

২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে কালোজিরা। নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে। এতে করে যে কোনও জীবানুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেহকে প্রস্তুত করে তোলে এবং সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।

৩. হাপানি সমস্যার সমাধানঃ যারা হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য কালোজিরা অনেক বেশি উপকারী। প্রতিদিন কালোজিরার ভর্তা রাখুন খাদ্য তালিকায়। কালোজিরা হাঁপানি বা শ্বাস কষ্টজনিত সমস্যা দূর করে।

৪. ঠান্ডা সমস্যার সমাধানঃ প্রচণ্ড সর্দি হয়ে মাথা যন্ত্রণা হচ্ছে? এ ক্ষেত্রে কালোজিরা পুঁটলিতে বেঁধে শুঁকতে হবে। তবে পুঁটলিতে নেওয়ার আগে তা রগড়ে নিতে হবে। তাতে গন্ধ বের হয় এবং উপকার হয়।

৫. মাথাব্যাথার উপশমঃ প্রচন্ড মাথা ব্যথা? কালোজিরে বেটে কপালে প্রলেপ দিলে ও মিহি গুঁড়োর নস্যি নিলে উপকার হয়। এটা তখন ঝান্ডু বামের মত কাজ করবে।

৬. চুলকানি উপশমঃ কালোজিরা ভাজা তেল গায়ে মাখলে চুলকানিতে উপকার হয়।

৭. ডায়াবেটিসের সমাধানঃ কালোজিরা ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তের গ্লুকোজ কমিয়ে দেয়। এতে করে কালোজিরা ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করে।

৮. স্মরণশক্তি ঠিক রাখাঃ স্মৃতিভ্রংশ ও স্মরণশক্তির দুর্বলতায় কালোজিরা খুবই কার্যকর।

৯. পেট ও প্রস্রাব পরিষ্কার রাখাঃ পরিমাণমতো কালোজিরা খেলে প্রস্রাব পরিষ্কার হয়।

১০. শিশুর মানসিক বৃদ্ধিঃ শিশুদের কালোজিরা খাওয়ানোর অভ্যাস করলে দ্রুত শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি ঘটে।